২০১৫ -য় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডি লিট জানানোর জন্য তাঁর নাম স্থির করেও শেষ পর্যন্ত আর যোগাযোগ করেননি৷ এ বার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০ জানুয়ারি প্রাক্তনী অমর্ত্য সেনকে ডি লিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও , আর বিবেচনা করা হয়নি আর এক প্রাক্তনী শঙ্খবাবুর নাম৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংসদ একটি পৃথক সম্মান জ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে৷ কিন্ত্ত ব্যক্তিগত কাজের কারণে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে অসুবিধা আছে বলে জানিয়েছেন কবি৷ কেন প্রাক্তনী সংসদের সম্মান নেবেন না তিনি ? 'এই সময় 'কে শঙ্খবাবুর সংক্ষিন্ত জবাব , 'আমার পক্ষে এই সম্মান নেওয়া সম্ভব নয়৷ ' কেন সম্ভব নয় ? এর পিছনে কি কাজ করছে অভিমান ? অশীতিপর শঙ্খবাবু মুখ খুলতে চাননি৷ কিন্ত্ত মনে করা হচ্ছে , ২০১৫ -র সমাবর্তনে তাঁকে ডি লিট দেওয়া নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছিল , তারই জেরে সম্মান নিতে তাঁর এই 'অপারগতা '৷
গত বছরের সমাবর্তনে কবিকে ডি লিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রেসিডেন্সির গভর্নিং বোর্ড৷ কিন্ত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগই করেননি৷ রাজ্য সরকারের নানা কাজের বিরুদ্ধে সরব শঙ্খবাবুকে সম্মান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরাগভাজন হওয়ার আশঙ্কা থেকেই কবিকে এড়িয়ে যাওয়া হল বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল সেই সময়ে৷ যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিতর্ক উড়িয়ে দেন৷ শঙ্খবাবুকে পরে সম্মান জানানো হবে বলেও জানিয়েছিলেন তাঁরা৷ এ নিয়ে গভর্নিং বোর্ডের কোনও কোনও সদস্যও বিস্ময় প্রকাশ করেন৷ এমনকি শঙ্খবাবুর মতো মানুষকে সম্মান জানিয়ে আসলে প্রেসিডেন্সিই সম্মানিত হত , সে কথাও বলেছিলেন অনেকে৷
ঘটনা হল , বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে কিন্ত্ত তাঁকে সম্মান জানানোর আর কোনও উদ্যোগ তার পরে নেওয়া হয়নি৷ সমাবর্তনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হল না৷ তা হলে ২০ জানুয়ারি যে বিশেষ সমাবর্তনে অমর্ত্য সেনকে সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হচ্ছে , সেখানেও শঙ্খ ঘোষকে সম্মান জানানো হচ্ছে না কেন ? প্রেসিডেন্সির রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলছেন , 'বার্ষিক সমাবর্তনে শঙ্খবাবুকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ আর এটা বিশেষ সমাবর্তন৷ এখানে শঙ্খবাবুকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত হয়নি৷ তাই এই প্রশ্ন উঠতে পারে না৷ ' ইতিমধ্যে অবশ্য শঙ্খবাবুকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিয়েছিল প্রাক্তনী সংসদ৷ আগামী ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্সির প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান৷ সেখানে অতুলচন্দ্র গুন্ত ডিস্টিংগুইশ্ড অ্যালামনাস অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার জন্য শঙ্খ ঘোষের নাম চূড়ান্ত করেছিল প্রাক্তনী সংসদ৷ কিন্ত্ত শঙ্খবাবু তা নিতে অস্বীকার করেছেন৷ প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিভাস চৌধুরী জানান , সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় , অমর্ত্য সেনকে আগেই এই সম্মান জানানো হয়েছে৷ গত বছর তপন রায়চৌধুরীর নাম স্থির করা হলেও তিনি মারা যাওয়ায় তা আর দেওয়া হয়নি৷
এ বছরই ২০১৫ এবং ২০১৬ -র সম্মান জানানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়৷ ২০১৫ -য় শঙ্খ ঘোষ এবং ২০১৬ -য় অর্থনীতিবিদ মিহির রক্ষিতকে সম্মান জানানো হবে বলে স্থির হয়৷ কিন্ত্ত শঙ্খবাবু আসতে পারবেন না জানানোয় কেবল মিহির রক্ষিতকেই সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ বিভাস বলেন , 'শঙ্খবাবু জানিয়েছেন , ২০ তারিখ তাঁর চিকিত্সকের কাছে যাওয়ার কথা৷ তাই তিনি আসতে পারবেন না৷ ২০১৫ -য় আর কাউকে সম্মান জানানো হচ্ছে না৷ এ বছরের সম্মাননার জন্য মিহির রক্ষিতের নামই স্থির করা হয়েছে৷ 'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সংসদ একটি পৃথক সম্মান জ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করেছিল তাঁর সঙ্গে৷ কিন্ত্ত ব্যক্তিগত কারণে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে অসুবিধা আছে বলে জানিয়েছেন কবি৷ কেন সম্মান নেবেন না তিনি ? 'এই সময় 'কে শঙ্খবাবুর জবাব , 'আমার পক্ষে এই সম্মান নেওয়া সম্ভব নয়৷ '৷
Saberee.G@timesgroup.com