Quantcast
Channel: Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay
Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249

সবটাই সুদীপ্ত-শান্তনুর গটআপ গেম

$
0
0

Chitradeep.Chakraborty@timesgroup.com

পালানোর আগে নিজের চিঠিতে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন তাঁর সংস্থা ডোবার জন্য ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষকে অভিযুক্ত করলেও তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারল আসলে পুরোটাই ছিল দু'জনের 'গটআপ গেম৷' একজনের লক্ষ্য ছিল মোটরবাইক কারখানা সামনে রেখে একাধিক ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করা অন্যজন অর্থাত্‍ সুদীপ্ত সেন হুগলির এই বাইক কারখানাকে 'শো-কেস' হিসেবে ব্যবহার করে বাজার থেকে টাকা তুলেছেন অবলীলায়৷ সারদা রিয়েলিটির মামলায় পঞ্চম চার্জশিটে এমনই তথ্য উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই৷ এ ছাড়া সুদীপ্তর উদ্দেশ্য ছিল কম টাকার জিনিস বেশি দামে বিক্রি দেখিয়ে সারদার টাকা সরানো৷

ঠিক কী বলা হয়েছে চার্জশিটে? সিবিআই আদালতকে জানিয়েছে, মেসার্স গ্লোবাল অটোমোবাইল লিমিটেড প্রথমে একটি প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থা হিসেবে নথিভুক্ত ছিল৷ পরে সেটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে কাজ শুরু করে৷ এই সংস্থাগুলির মূল শেয়ার হোল্ডার ছিল জেনাইটিস গ্রুপ, যার কর্ণধার ছিলেন ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষ৷ এই মোটরবাইক কারখানার স্থানীয় ঠিকানা ছিল হুগলির কামদেবপুর৷ কিন্ত্ত প্রযুক্তিগত কারণে প্রথম থেকেই কারখানাটিতে কোনও লাভ হচ্ছিল না৷ ২০১০ সালের ২৪ এপ্রিল সারদা কর্তার সঙ্গে শান্তনুর চুক্তি হয়৷ সেখানে দেখানো হয় মোট ৫৮ লক্ষ শেয়ারের দাম ২৫ কোটি টাকা৷ ফলে এই অঙ্ক দাঁড়ায় শেয়ার বাবদ পাঁচ কোটি আশি লক্ষ এবং ফেসভ্যালুর প্রিমিয়াম দাঁড়ায় আরও ১৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা৷

সিবিআই জানতে পেরেছে ওই সংস্থা যে লোকসানে চলছে তা অজানা ছিল না শান্তনুর৷ তবুও তিনি ৪২ লক্ষ টাকার কারখানাটি চড়া দামে বিক্রির চুক্তি করেন৷ পরে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর সুদীপ্ত ও শান্তনুর মধ্যে নতুন করে আরও একটি চুক্তি হয়৷ সেখানে সারদা রিয়েলটি গ্লোবাল অটোমোবাইলের ১০০% শেয়ার নিয়ে নেয় ২০ কোটি টাকার বিনিময়ে৷ কিন্ত্ত দু'জনের মধ্যে ওই সংস্থার মোট বিবেচনা মূল্য দাঁড়ায় ২২০ কোটি টাকা৷ অর্থাত্‍ ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া শান্তনুর টাকাও মেটাবেন সুদীপ্ত সেনই৷ সিবিআই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, এটা খুবই অদ্ভুত বিষয় যে একটা লোকসানে চলা সংস্থা যখন কেনা হচ্ছে তার বহু আগে ওই বাইক কারখানার জন্য একাধিক ব্যাঙ্কের কাছ থেকে বিপুল টাকা লোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে৷ এবং সারদা সংস্থা পুরোপুরি মালিকানাও পায়নি৷ ২০০৯-'১০ সালের ব্যালান্স শিটে গ্লোবাল অটোমোবাইল লিমিটেড সম্পর্কে বলা হয়েছে তারা প্রায় ২১ কোটি টাকা লোকসান করে ফেলেছে যেখানে সংস্থার মূল্য মাত্র ৪১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা৷

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন সুদীপ্ত এবং শান্তনুর মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী সাড়ে তেত্রিশ কোটি টাকা যে পেমেন্ট হয়েছে তা আমানতকারীদের থেকেই সংগ্রহ করা৷ এই টাকায় কারখানার কর্মীদের বেতন ছাড়াও ক্যান্টিন এবং অন্যান্য খরচ চালানো হত৷ সে সময়ে শান্তনু ঘোষ কারখানাটি সারদার 'শো-কেস' হিসেবে ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন৷ এই কারখানা দেখিয়েই সারদা প্রচুর টাকা তুলে নেয়৷ চার্জশিটে বলা হয়েছে, সুদীপ্ত সেন ওই সময় গাড়ি করে কারখানায় লোক পাঠাতেন৷ বাইরে তাঁর মাইনে করা কারখানার কর্মীরা সারদার দেওয়া পোশাক পরে দাঁড়িয়ে থাকত৷ বাসভর্তি লোক গেলে কারখানার কনভেয়ার বেল্ট চালিয়ে দেখানো হত কারখানার উত্‍পাদন চালু রয়েছে৷ এমনকি, সারদার বিভিন্ন ব্রাঞ্চ অফিসে গ্লোবাল অটোমোবাইলসের তৈরি প্রথম দিকের কয়েকটি বাইক এবং ফেস্টুনও টাঙিয়ে রাখা হত৷

আদালতে সিবিআই জানিয়েছে, ২০১০-'১১ সালের ব্যালান্স শিটে সারদা রিয়েলটি উল্লেখ করেছে তারা গ্লোবাল অটোমোবাইলের কাছে আট কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট রেখেছে৷ কিন্ত্ত গ্লোবাল অটোমোবাইলের ব্যালান্স শিটে সেই টাকার কোনও উল্লেখই নেই৷ সিবিআই প্রশ্ন তুলেছে এই বিপুল পরিমাণ টাকা তা হলে গেল কোথায়? এ ক্ষেত্রে শান্তনু ও সুদীপ্ত যোগসাজশ করেই এই টাকা সরিয়েছেন বলে আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷


Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249


<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>