Quantcast
Channel: Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay
Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249

জাডেজার হামলায় ফের ধূলিসাত্‍ আমলারা

$
0
0

সব্যসাচী সরকার, নয়াদিল্লি

টেস্ট ক্যাপ্টেন্সিটা বাঁচবে কি না অনিশ্চিত৷ কিন্ত্ত দিন কুড়ি পরে ডারবানে বক্সিং ডে টেস্টে ইংল্যান্ডের সামনে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে নামতে হলেও চলতি সিরিজের দুঃস্বপ্ন হাসিম আমলাকে অবধারিত তাড়া করবে৷

জিমি অ্যান্ডারসনকে খেলতে গিয়ে মনে হতে পারে, 'ওই অশ্বিন আসছে,' বা স্টুয়ার্ট ব্রডকে খেলতে গিয়ে 'ওই আসছে জাডেজা!' টি-টোয়েন্টি আর ওয়ান ডে সিরিজে জয়ের পরে যে আফ্রিকান সিংহরা নিজেদের 'বেস্ট ট্র্যাভেলার ইন ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট' দাবি করছিল, চার টেস্টের এই সিরিজ সেই তকমায় শুধু কালিই লাগাচ্ছে না, বাস্তবের রুক্ষ জমিতে টেনে নামাচ্ছে৷ যেখানে লোকে খারাপ পারফরম্যান্স নিয়ে শেন ওয়ার্নের বিখ্যাত মন্তব্যের অনুকরণে আমলাদের নিয়ে ফেসবুক বা টুইটারে অবলীলায় লিখে দিচ্ছে, 'কান্ট ব্যাট, কান্ট বোল, কান্ট ফিল্ড!' নাগপুরের উইকেটকে আইসিসি ম্যাচ রেফারি 'পুওর' বলে দেওয়ার পর কোটলায় টিপিক্যাল উপমহাদেশের উইকেটে 'স্পিনটা খেলতে জানি' বিবৃতিটা বিশ্বের এক নম্বর টিমের কাছ থেকে প্রত্যাশিত ছিল৷ তার বদলে এ বার জাডেজার হামলায় ফের ধূলিসাত্‍ আমলা অ্যান্ড কোং৷ মাত্র ১২১ রানে, মাত্র ৪৯.৩ ওভারে৷ তার মধ্যে শেষ সেশনে ন'টা উইকেট!

স্বচ্ছন্দে ফলো-অন করানো যেত, কিন্ত্ত বিরাট করাচ্ছেন না৷ আজ কোটলায় তৃতীয় দিন ফলো-অন না করিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করবে ভারত৷ যাতে আরও কঠিন উইকেটে শেষ ইনিংসে খেলতে হয় দীর্ঘ সফরের শেষে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া আমলাদের৷ 'ক্রিকেটে বিস্ময়কর ঘটনা এখনও ঘটে, ফানি গেম' বলে চূড়ান্ত আশাবাদের সর্বোত্‍কৃষ্ট নমুনা দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ম্যাচ শেষে রাখলেন বটে, কিন্ত্ত প্রোটিয়াদের ড্রেসিংরুমে পড়ে থাকা প্যাড-গ্লাভসও তাতে বিশ্বাস রাখছে বলে মনে হয় না৷ বরং কোটলার প্রেস বক্সে ভাসছে কটাক্ষ-'টেস্ট ক্রিকেটে ২০১৫ সালে এটাই সবচেয়ে বড় চমক৷ ন'বছর বিদেশে অপরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকাকে এ দেশে দেখে লোকে স্বচ্ছন্দে জিম্বাবোয়ে বলে চালাতে পারে৷ কেউ দোষ দেবে না!'

এতেই লজ্জার শেষ হচ্ছে না৷ হোম টিমের একপেশে দাপট দেখতে দেখতে বিরক্তির শীর্ষে পেঁৗছে যাওয়া কোটলার গ্যালারি কি না শেষ বিকেলে সাপোর্ট করল এবি-কে৷ তাঁর হাফ সেঞ্চুরির জন্য আওয়াজ তুলল 'এবি, এবি!'

এই সিরিজে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যানের র্যাঙ্কিং কমে তিনে নেমে আসতে পারে, কিন্ত্ত তাতে এ দেশে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি৷ টিমের ধারাবাহিক ব্যর্থতাকে স্কিল আর টেম্পারামেন্টকে দিয়ে ঢেকে ফেলার মরিয়া চেষ্টাটা করে যাচ্ছিলেন এবি (৪২)৷ ফলো-অন বাঁচাতে গেলে ঝুঁকিটা নিতেই হত৷ জাডেজার বলে লিফ্ট করতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ইশান্তের অসাধারণ ক্যাচে শেষ ১২১ মিনিটের প্রতিরোধ৷ যা একটা না একটা সময় অবধারিত ছিল৷

কিন্ত্ত বাকিরা? ব্যাটিং নিয়ে না বলাই ভালো৷ সবাই উইকেট তুলেছেন, কিন্ত্ত কোটলায় দ্বিতীয় দিন আসলে জাডেজার৷ যতই পাঁচ উইকেট পান, বিশ্বমানের বাঁ হাতি স্পিনার এখনও নন৷ পছন্দের উইকেট না পেলে তাঁর বিষদাঁত মোটেই কাজ করে না৷ এ বার রঞ্জিতে রাজকোটে তাঁর প্রত্যাবর্তনের জন্যই তৈরি হয়েছিল স্পিনিং ট্র্যাক৷ সেখানে বল করে ঝুড়ি ঝুড়ি উইকেট তোলার পরে আত্মবিশ্বাসটা তো বেড়েইছে, সঙ্গে এসেছে নিয়ন্ত্রণ৷ যেখানে ক্রিজকে ব্যবহার করে নিখুঁত লেংথে গতির হেরফের সোনা ফলাচ্ছে (১২-২-৩০-৫)৷ গোটা একটা সিরিজ চলে গেল, তাঁর সোজা বলটাও খেলতে শিখল না আমলার টিম৷ এদিন সাপোর্টিং রোলে অশ্বিনের দুটো উইকেট, উমেশের দুটো, ইশান্তের একটা৷ দুই পেসারই দেখালেন উপমহাদেশের উইকেটে রিভার্স সুইংকে ভরসা করে কী ভাবে বোলিংটা করতে হয়৷ উমেশের যে বলটায় ডুমিনির স্টাম্প জোহানেসবার্গের দিকে উড়ে গেল, সেটা দিনের অন্যতম সেরা ডেলিভারি৷

আবার বিরাট প্রোটিয়াদের ফলো-অন না করানোয় ফের বিশাল ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য তাঁকে বিশেষ ধন্যবাদ দিতে পারে স্টার ইন্ডিয়া৷ ফলো-অন করালে আজ তিন নম্বর দিনেই ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল৷ ভারত দ্বিতীয় বার ব্যাট করা মানে ম্যাচ তিন থেকে চার নম্বর দিনে যাবে৷ প্রতি দিন যেখানে ম্যাচ না হলে স্টারের ৯ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে, সেখানে একটা দিন বেশি খেলা হওয়া মানে ক্ষতির অঙ্ক কমবে৷

স্টার ইন্ডিয়ার আলাদা 'থ্যাঙ্ক ইউ' প্রাপ্য রাহানে-অশ্বিন জুটিরও৷ সকালে লম্বা জুটিটা না হয়ে ভারত যদি ২৫০ বা ২৭৫ এর মধ্যে থামত, এই ম্যাচের গল্প অন্যরকম হতে পারত৷ সকালে অব্যাট-মর্কেল চমত্‍কার শুরু করেছিলেন, কিন্ত্ত ভাগ্য টিমের সঙ্গে নেই৷ প্রথম দিন দুটো ফেলার পরে এ দিনও স্লিপে অশ্বিনের ক্যাচ ফেলেছেন ক্যাপ্টেন আমলা৷ শেষ পর্যন্ত অশ্বিন ৫৬ করে গেলেন৷ রাহানের ক্যাচও আগের দিন ৭৮ রানে ফেলেছিলেন৷ সিরিজে একমাত্র সেঞ্চুরি রাহানের ব্যাট থেকেই৷ কেরিয়ারে পঞ্চম ও দেশের মাঠে প্রথম৷ বছর আড়াই আগে ২০১৩ সালের মার্চে এই কোটলাতেই অভিষেক৷ সেদিন মনে রাখার মতো অভিষেক না হলেও প্রথম প্রত্যাবর্তনেই ১২৭৷ ১৩৯-৬ হয়ে যাওয়া ভারতকে টেনে তুলে ম্যাচ জেতার মতো জায়গায় পেঁৗছে দিল যে ইনিংস৷
ভারতে এসে বিশ্বের এক নম্বর টিমের এই দুর্দশা মনে করাচ্ছে ২০১১ সালের বিশ্বকাপের পর ভারতের ইংল্যান্ড সফর৷ সেই সফরের আগে ভারতই ছিল বিশ্বের এক নম্বর টেস্ট টিম৷ চার টেস্টের সিরিজে হারতে হয়েছিল ০-৪৷ টিমে সচিন, রাহুল, লক্ষ্মণ, সহবাগ থাকা সত্ত্বেও৷ চার টেস্টের মধ্যে রাহুল তিনটে সেঞ্চুরি করা সত্ত্বেও!

সে বার ধোনির তারকাখচিত টিমকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিল ইংল্যান্ড৷ ঠিক যেমন এ বার আমলাদের নিয়ে খেলছে বিরাটের ভারত৷ দিল্লির আবহাওয়া বিশ্বাসঘাতকতা না করলে বিশ্বের দুই নম্বর টিম হওয়া ভারতের কপালে নাচছে৷

আর আমলারা? ভারতে টেস্ট মানেই আপাতত 'অ-য় অশ্বিন আসছে তেড়ে!'




Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249

Trending Articles



<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>