মন্ত্রী এ দিন বলেন, 'এ দেশের পড়াশোনা-গবেষণা নানা ভাষায় হয়৷ ভারত বিবিধতার দেশ৷' দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি কেন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে আসছে না, সে বিষয়ে সাফাই দিতে গিয়েই বিবিধতার উপর ভরসা রেখেছেন মন্ত্রী৷ কিন্ত্ত দেশের শিক্ষানীতি কী হবে, তা ঠিক করতে দু'দিন ধরে চলা জাতীয় সেমিনারের শেষ দিনে অবশ্য চলতি বিতর্ক যেমন পাশ-ফেল প্রথা অথবা নন-নেট ফেলোশিপ তুলে দেওয়া নিয়ে একটিও বাক্য খরচ করেননি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী৷ অথচ, গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের বাইরে তখন পাশ-ফেল, নন-নেট দুটি ইস্যুতেই বিক্ষোভরত বিভিন্ন ছাত্র ও গবেষক সংগঠন৷ ছাত্র সংগঠন ডিএসও, পিডিএসফ, গবেষক সংগঠন ডিআরএসও'র তরফে এই বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ পোড়ানো হয় মন্ত্রীর কুশপুতুলও৷
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে কেন ভারতের কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপরের দিকে থাকে না, সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন স্মৃতি৷ এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু আচার্য ও শিক্ষাবিদদের প্রকাশ্যে আক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছে৷ ক'দিন আগেই এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ও৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা ভাষায় গবেষণা হয়৷ অথচ বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে যে সব দিক দেখা হয়, তার মধ্যে গবেষণা একমাত্র ইংরেজিতে হলেই তারা বিচার্য তালিকায় আনে৷ এর মানে এই নয় যে, আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি খারাপ৷ সেখানে কোনও কাজই হচ্ছে না৷' এই প্রেক্ষিতে অতি শীঘ্র দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির র্যাঙ্কিং করার কথা ঘোষণা করে মন্ত্রী বলেন, 'আমরা ন্যাশনাল ইনস্টিউশন র্যাঙ্কিং চালু করব৷ প্রতিষ্ঠানগুলিতে ঘুরে ঘুরে এআইসিটি বা ইউজিসির মতো সংস্থা নানা দিক খতিয়ে দেখবে৷ তার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলির র্যাঙ্কিং করব আমরা৷ এপ্রিলের আগেই সেই র্যাঙ্কিং করা হবে৷ যাতে পড়ুয়ারা ভর্তির আগে এই তুলমূল্য বিচার করতে পারে, সে যেখানে ভর্তি হতে চাইছে গোটা দেশের সেই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে৷'
পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের দাবি-দাওয়া, অভাব-অভিযোগ শোনার জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট চার্টার খোলার পরামর্শ দিয়েছেন স্মৃতি৷ একই সঙ্গে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আর্থিক সাহায্যের ব্যাপারে কড়া হওয়ার কথাও বলেন তিনি৷ মন্ত্রী বলেন, 'মানুষের করের টাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কী করছে, সে সব আরও ভালো ভাবে যাচাই করে আমরা আর্থিক সাহায্য করব৷ সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক পদ পূরণ হয়েছে কি না, লাইব্রেরি-ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো যুগোপযোগী কি না, এ সব খতিয়ে দেখা হবে৷'
এই সময়: দেশের অখণ্ডতার ইস্যুতে যখন বিতর্কে বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার, ঠিক তখনই শিক্ষাক্ষেত্রে বিবিধতার কথা শোনালেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি৷ গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশনের সভাকক্ষে রবিবার যখন বিবিধতার বাণী দিচ্ছেন মন্ত্রী, ততক্ষণে অবশ্য বিহার ভোটের ফলাফলে তাঁর দলের ভরাডুবির ছবিটা সামনে চলে এসেছে৷