মালির রাজধানী বামাকো শহরের প্রায় মধ্যস্থলে হোটেল র্যাডিসন ব্লু। ১৯০ ঘরের এই হোটেলের সাততলায় দু-জন জঙ্গি ১৭০ জনকে পণবন্দি করে রেখেছিল। এঁদের মধ্যে ১৪০ জন অতিথি, বাকিরা ওই হোটেলের কর্মী বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হোটেলের করিডোর থেকেই বন্দুকধারীরা গুলি চালায়।
জঙ্গিদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে, স্বভাবতই উচ্ছ্বাস গোপন করতে পারেননি ভারতীয়রা। দেব বুলানি নামে এক সিন্ধি ব্যবসায়ী তখনও উত্তেজনার ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারেননি। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে ফোনে বলেন, আমরা এখন মুক্ত। ফরাসি সেনা গিয়ে উদ্ধার করেন বুলানিকে। শুক্রবার সকালে ইসলামিক জঙ্গিরা যখন র্যাডিসন ব্লু হোটেলে হানা দেয়, তখন সেখানেই ছিলেন বুলানি।
এই বুলানির বাড়ি আজমেঢ়ে হলেও পেশার তাগিদে তাঁকে এখন থাকতে হয় কখনও দুবাই কখনও বামাকোয়। টিভিএস ও এলজি ইলেকট্রনিক্সের তিনি ডিস্ট্রিবিউটর। ফোনে বুলানি জানান, যে হোটেলটিতে জঙ্গিরা হানা দিয়েছিল, সেখান থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে তাঁর আবাসন। হোটেলের সুইমিংপুলের গা লাগোয়া তাঁর আবাসনটি।
বুলানি বলেন, হোটের পিছনের গেট দিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে, বুলানিরই একটি নিরাপদ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছে যৌথ বাহিনী।
মালির ভারতীয় দূতাবাসের তরফেও জানানো হয়েছে, পণবন্দি হওয়া ভারতীয়রা এখন নিরাপদে রয়েছেন। সবাইকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, যে ১৮জন পণবন্দি গুলিতে মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিচয় এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
মালির এই হোটেলে জঙ্গি হামলার নেপথ্যে যে ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠীরই হাত রয়েছে, তা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। প্যারিস হামলার সাত দিনের মাথায় এই হামলা। প্রথম থেকে আইসিসকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হলেও, এই হামলার দায় নেয় আল মোরাবিঁতন। জানা গিয়েছে, এটি আল কায়দারই সহযোগী সংগঠন। তবে, হামলার নেপথ্যে আফ্রিকার এই জঙ্গিসংগঠনটি আদৌ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এর আগে গত অগস্টেও মালির অন্য এক হোটেলে পণবন্দি রেখে তাণ্ডব চালিয়েছিল ইসলামিক জঙ্গিরা। আল কায়দার সহযোগী জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে আফ্রিকার এই দেশে। জুন মাসে শান্তি চুক্তির পরেও দফায় দফায় মালিতে জঙ্গি হামলা অব্যাহত। ২০১৩-র জানুয়ারি মাসে ফরাসি সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে মালিকে জঙ্গি কবল থেকে মুক্ত করার অভিযান শুরু হয়। তার পরও প্রত্যাঘাত করে চলেছে সন্ত্রাসবাদীরা।
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার মালির হোটেলে পণবন্দি ভারতীয়দের নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ২০জন ভারতীয় সহ মোট ১৭০ জনকে পণবন্দি করে রেখেছিল জঙ্গিরা। এর মধ্যে ওই হোটেলের ৩০ জন কর্মীও ছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী গিয়ে অভিযান চালিয়ে, পণবন্দিদের উদ্ধার করে আনেন। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত জঙ্গিদের হাতে ১৮জন নিহত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে দুই জঙ্গিরও। বাকি পণবন্দিদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই হামলার দায় নিল আলকায়দার সহযোগী সংগঠন আল মোরাবিঁতন।