Quantcast
Channel: Bengali News, বাংলা নিউজ, বাংলায় সর্বশেষ খবর, Live Bengali News, Bangla News, Ajker Bengali Khabar - Eisamay
Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249

শহর স্বচ্ছ রাখতে অনাগ্রাহী বাসিন্দারা

$
0
0

এই সময়: ঔদাসীন্য? অভ্যাস নাকি নিছকই 'বেশ করেছি' মানসিকতা? হয়তো তিনটেরই কিছুটা করে মিশেলের বহিঃপ্রকাশ রয়েছে শহর পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে কলকাতার নাগরিকদের আচরণে!প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার 'স্বচ্ছ ভারত' অভিযানের প্রাথমিক সমীক্ষায় নাম আছে পশ্চিমবঙ্গের শুধু আসানসোলের, তাও আবার ৭৩টি শহরের মধ্যে ৭২তম স্থানে৷ শহরগুলি ভয়াবহ ফল করেছে৷ শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে কার উদ্যোগ বেশি, প্রশাসন না নাগরিকরা তা খতিয়ে দেখতেই বের হয়েছিলেন এই সময়ের প্রতিনিধিরা৷ যা ধরা পড়ল তাতে প্রশাসন নয়, কাঠগড়ায় তোলা যায় শহরের বাসিন্দাদেরই৷নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর 'উত্কর্ষ বাংলা'-র অনুষ্ঠান শেষ হতেই ভিতর থেকে বেরিয়ে এলেন বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের পলিটেকনিক স্কুলগুলির পড়ুয়া ও শিক্ষকরা৷ চিত্তরঞ্জনের নজরুল সেন্টিনারি পলিটেকনিক থেকে ১৬০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে এসেছিলেন জনাকয়েক শিক্ষক৷ অনুষ্ঠান শেষে হাতে খাবারের প্যাকেট নিয়ে পড়ুয়া ও শিক্ষকরা মিলে হাজির হলেন ময়দানে৷ ছোট-বড় দলে ভাগ হয়ে চলল চড়ুইভাতি৷ খাওয়া শেষে বাসে উঠে চলে গেলেন নিজেদের জায়গায়৷

ময়দানের সর্বত্র ছড়িয়ে রইল খাবারের খালি প্যাকেট, থার্মোকলের থালা ও প্লাস্টিকের বোতল৷ পরে এক শিক্ষকের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বললে তিনি স্বীকার করেন, এই বিষয়টি তখন তাঁর মাথায় আসেনি৷ একা ওই শিক্ষক নন, মেধার জন্য পুরস্কার পাওয়া পড়ুয়ারা বা অন্য শিক্ষকদেরও শহর পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি মাথায় আসেনি৷ অথচ, পরিচ্ছন্নতার প্রথম পাঠ দেন শিক্ষকরাই৷এই ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, শহরের সর্বত্র চোখে পড়ে এমন দৃশ্য৷ না, নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে ত্রুটি নেই প্রশাসনের৷ নিয়মিত সাফ করা হয় জঞ্জাল ফেলার জায়গাগুলি৷ প্রতি দু'-তিনটি ওয়ার্ড মিলে বসানো হয়েছে পরিবেশ-বান্ধব কম্প্যাক্টর যন্ত্র৷ অভাব যদি কিছুর থেকে থাকে তা খোদ নাগরিকদের মানসিকতাতেই৷ কলকাতার সর্বত্র বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে প্রতিদিনই দেখা যায় জেনেশুনে শহর অপরিচ্ছন্ন করতে৷

চৌরঙ্গির ফুটপাথ৷ কয়েক হাত দূরেই ডাস্টবিন৷ তবু সদ্য শেষ করা চিপসের প্যাকেটটা রাস্তার উপরেই ফেলে দিলেন ধবধবে সাদা শার্ট, টাই, ফর্ম্যাল ট্রাউজার আর ঝকঝকে জুতো পরা বেসরকারি সংস্থার কর্মী৷ ডাস্টবিন সামনে থাকতেও রাস্তায় প্যাকেট ফেললেন কেন জানতে চাইলে এমন ভাবে তাকালেন যেন ভিনগ্রহের কাউকে দেখছেন৷ তার পর আদৌ পাত্তা না দিয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে চলে গেলেন৷একা ধোপদূরস্ত পোশাক পরা ওই কর্মীই নন, কলকাতা শহরের যে কোনও জায়গাতেই এমন দৃশ্য হামেশাই চোখে পড়ে৷ কষ্ট করে খুঁজতেও হয় না৷ শিয়ালদহ রেল স্টেশন চত্বরের চায়ের দোকানে চা খেয়ে ভাঁড় রাখার বালতির উপস্থিতি উপেক্ষা করে অবহেলে প্লাস্টিকের কাপ বা ভাঁড় ছুঁড়ে দিয়েই এই সময়ের প্রতিনিধির মুখোমুখি হওয়ার পর প্রায় সবাইকেই দেখা গেল লজ্জিত মুখে এলাকা ছেড়ে পালাতে৷ কেউ কেউ অবশ্য একটু জোর গলায় 'অনেকেই তো ফেলছে' বলে রুখে ওঠার চেষ্টাও করলেন৷

অসুস্থ পরিজনকে আর জি কর হাসপাতালে দেখতে এসে হাসপাতাল চত্বরেই খাবারের প্যাকেট ফেলতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়া অম্লান নস্কর অবশ্য 'ভুল হয়ে গিয়েছে' বলে স্বীকার করেছেন৷ তবে, স্কটিশ চার্চের একদল ছাত্রছাত্রী এগরোল খেতে খেতে পথ চলার সময় রাস্তার সর্বত্র কাগজ ফেলতে ফেলতে যাওয়ার মধ্যে কোনও অন্যায় আছে বলে কিছুতেই স্বীকার করেননি৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আচরণ ক্রমশ উগ্র হয়ে উঠতে শুরু করে৷আসানসোল ও দুর্গাপুর থেকে কাজের দরকারে কলকাতায় আসা এস কে গোপাল বা শক্তি ঘোষ অবশ্য কলকাতার পথে যেমন তেমন ভাবে জঞ্জার ফেলার মধ্যে দোষ কিছুই দেখেন না৷ তাঁদের সাফাই, 'কলকাতা তো আমাদের শহর নয়৷ এখানকার পথ-ঘাট নোংরা হল কি হল না তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না৷' বিধাননগরে পানের দোকানদার দেবদুলাল মান্না দাবি করছেন, 'দেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে এমন অভিযান যে চলছে তা-ই জানি না৷' তাঁর অভিযোগ, পর্যান্ত ডাস্টবিনের অভাবেই নাকি পথঘাট নোংরা করেন সাধারণ মানুষ৷

এমন দাবির বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ করেছেন বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র সব্যসাচী দত্ত৷ জানিয়েছেন, 'সর্বত্র ডাস্টবিন দেওয়া আছে৷ সাধারণ মানুষের মধ্যেই সচেতনতার অভাব আছে৷' একই কথা জানিয়েছেন কলকাতা কর্পোরেশনের ১২ নং বরোর চেয়ারম্যান সুশান্ত কুমার ঘোষ৷ তাঁর বক্তব্য, 'আমরা তো সব রকম ভাবে পরিষেবা দিচ্ছি৷ এ বার নাগরিকরা একটু মানুন৷ তবে তো শহরটা পরিচ্ছন্ন থাকবে৷' পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ার চেষ্টায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য যে মানসিকতা দেখিয়েছে তার তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পশ্চিমবঙ্গ৷ প্রশাসন যে উদ্যোগ দেখিয়েছে তার পর নাগরিকরা 'স্বচ্ছ বাংলা' গড়ার মানসিকতা দেখালেও রাজ্য যে অনেকটা পরিচ্ছন্ন হবে এ নিয়ে সন্দেহ নেই৷




Viewing all articles
Browse latest Browse all 87249


<script src="https://jsc.adskeeper.com/r/s/rssing.com.1596347.js" async> </script>