শক্তিশালী এবং উদার একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরির লক্ষ্যে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী৷ তবে তাঁর মতে, বেআইনি টাকা মূল দেশে ফেরাতে গেলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় গোপনীয়তা কিছুটা কমাতে হবে৷ তাঁর কথায়, 'ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় অতিরিক্ত গোপনীয়তা এবং আইনি ও পদ্ধতিগত জটিলতার সমস্যা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে৷' কালো টাকা রুখতে পারস্পরিক সহযোগিতা কী ভাবে কার্যকরী হতে পারে, সে বিষয়ে কিছু প্রস্তাবও রেখেছেন মোদী৷ যেমন, বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয়কর সংক্রান্ত তথ্যের আদানপ্রদান এবং তার ভিত্তিতে কিছু সাধারণ নিয়ম তৈরি, ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের বিভিন্ন দেশভিত্তিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে কালো টাকা সঞ্চয়ের প্রবণতা অনেকটা কমানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি৷ সরকারি ভাবে তথ্য বিনিময়ের পাশাপাশি ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামোর সুরক্ষার জন্য জোর দেন সাইবার নিরাপত্তার উপরে৷
প্রসঙ্গত, মোদী সরকার দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছে, ভারতীয়দের বিপুল পরিমাণ কালো টাকা সুইস ব্যাঙ্কগুলিতে জমা রয়েছে৷ কিন্ত্ত সুইস ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট-মালিকদের সম্পর্কে তথ্য পেতে গেলে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়৷ যা দেশে কালো টাকা ফেরানোর ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ গত লোকসভা নির্বাচনের আগে একশো দিনের মধ্যে কালো টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী৷ এ নিয়ে বার বার তাঁকে প্রশ্ন এবং বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে৷ এমনকি, সাম্প্রতিক বিহার নির্বাচনের প্রচারেও বিরোধী পক্ষ কালো টাকা নিয়ে মোদীর 'মিথ্যা প্রতিশ্রুতি'কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে৷ আর ললিতগেট, ব্যাপমের মতো দুর্নীতি নিয়ে তো সংসদের গত অধিবেশনে তোলপাড় হয়েছে৷ আর এই বিষয়গুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মৌন বিতর্কে আরও ইন্ধন দিয়েছে৷ সংসদের আসন্ন শীত অধিবেশনেও ফের সেই প্রসঙ্গ ফিরে আসবে, এমন সম্ভাবনা রয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মঞ্চে দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী সম্ভবত আগাম জবাব দেওয়ার কাজটাই এগিয়ে রাখলেন৷
এ ছাড়া আইএমএফ-এর ক্ষেত্রে কোটা ভিত্তিক ব্যবস্থা চালু রাখার পক্ষে সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তাঁর কথায়, 'আইএমএফ কোটা-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই থাকা উচিত, ধার করা সম্পদের উপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়৷' এ বিষয়ে আমেরিকায় ২০১০ সালের সংস্কারগুলি শীঘ্রই অনুমোদন পাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি৷
আনাতোলিয়া: দুর্নীতি ও কালো টাকা বিষয়ে কোনও রকম আপস করবে না ভারত৷ জি-২০ বৈঠকের শেষ দিনে ফের দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সোমবারের দ্বিতীয় সেশনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমার সরকার দুর্নীতি ও কালো টাকার বিষয়ে জিরো-টলারেন্স নীতি নিয়েছে৷ হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি ও টাকার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা নতুন আইনও এনেছি৷' তবে কালো টাকার মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো এবং ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় গোপনীয়তা কমানো জরুরি বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী৷