বিশেষ অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) দেবাশিস বড়াল এ দিন বলেন, 'মৃত ব্যক্তির নাম বীরেন নন্দী৷ ৫৫ বছরের ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকায়৷ প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মাথায় আঘাত করার পাশাপাশি শ্বাসরোধও করা হয়েছিল তাঁর৷'
বৈঠকখানা সেকেন্ড লেনের সংকীর্ণ গলিতে বীরেনবাবুর দোকান প্রায় ১৫ বছরের (দোকানটি ভাড়ায় নেওয়া)৷ লজেন্স, চানাচুর, বিস্কুটের ওই দোকানে অন্তত চারজন কর্মী- কুন্তল পাঁজা, রিপন বর্মন, প্রিতোষ অধিকারী ও সুনীল বসু--রয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে কেউ-কেউ কখনও-কখনও রাতে ওই দোকানেই রয়ে যান৷ বীরেনবাবু রোজই রাতে দোকানে থাকেন৷
এলাকা সূত্রে খবর: দোকানের উপরে যে ঘরটি রয়েছে, মূলত সেখানেই থাকতেন বীরেনবাবু৷ রাতে দোকান বন্ধ করার পর ভিতর দিয়ে শাটার নামিয়ে পিছন দিকের কাঠের দরজা দিয়ে উপরের ঘরে উঠে যেতেন বীরেনবাবু এবং অন্যরা৷ তবে এ দিন দোকানের মেঝে থেকে বীরেনবাবুর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হওয়ায় পুলিশের ধারণা, সোমবার দোতলার ঘরের পরিবর্তে দোকানেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ দেবাশিবাবু এ দিন বলেন, 'সোমবার রাতে বীরেনবাবুর সঙ্গে দোকানে অথবা দোতলার ঘরে অন্য কোনও কর্মী ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷' মুচিপাড়া থানার পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার দোকানগুলির তুলনায় অনেক আগে দোকান খুলতেন বীরেনবাবু৷ সওয়া চারটে থেকে সাড়ে চারটে নাগাদ দোকান খুলে যেত তাঁর৷ পাইকারি ব্যবসায়ী বীরেনবাবুর দোকান অনেক সময়ই খুলত ক্রেতাদের ডাকে৷ রাত দশটা থেকে সাড়ে দশটা নাগাদ দোকান বন্ধ করতেন বীরেনবাবু৷
এ দিন সকালে রাজু পাত্র নামে এক মাল সরবরাহকারী তাঁকে ডাকতে এলে দেখেন, দোকানের শাটার নামানো৷ কিন্ত্ত তাতে একটিও তালা লাগানো নেই৷ সাধারণত ওই শাটারে চারটি তালা লাগানো থাকে৷ সন্দেহ হওয়ায় শাটারে ক্রমাগত ধাক্কা দেন ওই ব্যক্তি৷ খবর দেওয়া হয় স্থানীয় মুচিপাড়া থানায়৷ পুলিশ এসে শাটার তুলে দেখে, মেঝেয় লুঙ্গি ও সাদা হাফ স্লিভ শার্ট পরে পড়ে রয়েছেন বীরেনবাবু৷ মাথার পিছনের অংশ প্রায় থেঁতলে গিয়েছে৷
নাক-ঠোঁট থেকেও রক্ত গড়িয়ে পড়ছে৷ চার কর্মী ছাড়া আরও এক ব্যক্তির খবর এসেছে পুলিশের কাছে৷ ওই ব্যক্তি দোকানের কর্মী না অস্থায়ী কর্মী, তা স্পষ্ট নয়৷ গত শুক্রবার থেকে তিনি ছুটি নিয়েছিলেন বলে তদন্তে জেনেছেন গোয়েন্দারা৷ তাঁর সঙ্গে কোনওভাবে এই ঘটনার যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
এই সময়: বৈঠকখানা বাজারের একটি শাটার বন্ধ দোকান থেকে উদ্ধার হল ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত দেহ৷ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছ'টা-সাতটা নাগাদ মুচিপাড়া থানা এলাকার অন্তর্গত ৮ নম্বর বৈঠকখানা সেকেন্ড লেনের 'দত্ত স্টোর্স' থেকে ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়েছে৷ ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়েছে বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ৷ পরিচিত কেউ এই ঘটনার পিছনে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে হোমিসাইড শাখা৷