বুধবারই হোয়াইট হাউসের তরফে নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবিত খসড়া প্রকাশিত হয়েছে৷ তবে, তা কবে কার্যকর হবে, আদৌ কার্যকর হবে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে চায়নি আমেরিকা৷ কিন্ত্ত এই খসড়ার প্রেক্ষিতেই এ দিন রৌহানি বলেন, 'প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যাপারে তেহরানের অধিকারে বেআইনি হস্তক্ষেপ করছে আমেরিকা৷' আর তাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী হোসেন দেহঘানের প্রতি প্রেসিডেন্টের নির্দেশ, 'দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের মিসাইল তৈরির প্রক্রিয়া জোরদার ও ত্বরাণ্বিত করা হোক৷'
ইরানের পারমাণবিক কার্যকলাপ নিয়ে ক'মাস আগেই আমেরিকার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ তাতে স্থির হয়েছিল, ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কার্যকলাপ চালালে এক সপ্তাহের মধ্যেই আগের সব নিষেধাজ্ঞা ইরানের উপর থেকে তুলে নেবে আমেরিকা৷ এই চুক্তির মান রেখেই ইউরেনিয়ামের একটি খনি রাশিয়ার হাতে তুলে দিয়েছে ইরান৷ কিন্ত্ত তাতেও থামছে না সমস্যা৷ ক'দিন আগেই আমেরিকা অভিযোগ তোলে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে মিসাইল পরীক্ষা করছে ইরান৷ শুধু তাই নয়, পারস্য উপসাগরের সঙ্গে সংযোগকারী হর্মুজ প্রণালীতে সম্প্রতি বেশ কিছু রকেট ছুড়েছে ইরান, যা মার্কিন যুদ্ধজাহাজের কানঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে৷ আমেরিকার মতে, হর্মুজ প্রণালীর মতো সদাব্যস্ত একটি আন্তর্জাতিক জলপথে এ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিরাপদ নয়৷ আর তাই মিসাইল পরীক্ষা রুখতে ওবামা প্রশাসন সম্প্রতি একটি নতুন নিষেধাজ্ঞার খসড়া বানিয়েছে৷ আমেরিকার দাবি, এ ধরনের মিসাইল পরীক্ষা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিয়মবিরোধী৷ 'রিভলিউশানারি গার্ড'-এর মুখপাত্র রামেজান শরিফ অবশ্য এই সব অভিযোগকেই বানানো বলে দাবি করেছেন৷ তবে, আমেরিকার এই নয়া নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে এ দিন জেনারেল দেহঘান বলেন, 'ইরান ও সমগ্র বিশ্বের পরিস্থিতিতে আমরা মনে করি একমাত্র শক্তির মাধ্যমেই শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব৷ আর তাই আমরা আমাদের মিসাইলের পাল্লা ও নিখুঁত লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছি৷'
তবে, প্রেসিডেন্ট রৌহানির এই একরোখা পদক্ষেপকে অনেকেই অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চাপ বলে মনে করছেন৷ রৌহানি আমেরিকার সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক চেয়েই পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন৷ বিরোধী দলগুলি এই চুক্তিকে স্বাগত জানালেও তাঁদের দাবি ছিল, আমেরিকাকে কখনওই বিশ্বাস করা যায় না৷ সেক্ষেত্রে একচুল এদিক-ওদিক হলেই আমেরিকা সেটাকে চুক্তিভঙ্গ বলে নয়া নিষেধাজ্ঞা চাপাবে৷ বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, বিরোধীদের এই দাবি সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতেই তাই এ ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন রৌহানি৷ তবে, ইরান-আমেরিকার এই চাপানউতোরে আইএস বিরোধী অভিযান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা বিভিন্ন মহলে৷ - সংবাদসংস্থা
তেহরান: ইরান মিসাইল তৈরির কাজকর্ম থামাচ্ছে না বলে তাদের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা চাপানোর ভয় দেখিয়েছিল আমেরিকা৷ তার বিনিময় প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে আরও বেশি মিসাইল তৈরির নির্দেশ দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি৷