আর অজিত দোভালকে চিঠি লেখার উদ্দেশ্য হল, তিনি অত্যন্ত দক্ষ পুলিশ অফিসার ছিলেন৷ দক্ষ অফিসারদের জানেন৷ তাই তিনি নাম সুপারিশ করতে পারবেন৷ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব বিষয় তিনি দোভালকে আগেভাগেই জানাবেন৷ কেজরিওয়ালকে চিঠি লিখে গোপাল সুব্রমণিয়াম জানিয়েছেন, তিনি সংবিধানের যেটুকু বুঝেছেন, তাতে নির্বাচিত সরকার এই কমিশন গঠন করতেই পারে৷ সংবিধানই তাঁদের এই ক্ষমতা দিয়েছে৷ রাজ্যের তালিকায় ও যৌথ তালিকায় থাকা বিষয়ে তাঁরা তদন্ত করতে পারবেন৷কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর মনে করেন, দিল্লি সরকারের কাছে এই ধরনের কমিশন তৈরি করার ক্ষমতাই নেই৷ তাই এ নিয়ে আর কোনও বিতর্কের অবকাশই নেই৷ আসলে নাজিব জঙ্গ, জাভড়েকরদের যুক্তি হল, দিল্লি পূর্ণ রাজ্য নয়, এটা আসলে একটা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল৷ তাই অন্য রাজ্য সরকার যা করতে পারে, দিল্লি তা পারে না৷ কেজরিওয়াল এটা বুঝতে পারছেন না বা বুঝতে চাইছেন না৷ সমস্যাটা সেখানেই হচ্ছে৷ কিন্ত্ত কেজরিওয়াল ও আপ-এর মতে দিল্লি সরকার জনতার রায়ে জিতে এসেছে৷ নির্বাচিত সরকার হওয়ার সুবাদে এই ক্ষমতা তাঁদের হাতেই থাকবে৷
এই অবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কী রায় দেবে সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যদি নাজিব জঙ্গের মত মেনে নেয় তা হলে কী হবে? সে ক্ষেত্রে কেজরিওয়ালকে হয় আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে বা রাজনৈতিক লড়াই চালাতে হবে বা তিনি দুটোই একসঙ্গে করতে পারেন৷ আপ-এর দাবি, রাজনৈতিকভাবে তাঁরা ভাল জায়গায় আছে৷ কারণ, এটা দুর্নীতির বিষয়৷ দুর্নীতি নিয়ে যদি মোদী সরকার তদন্ত করতে না দেয়, তার অর্থই হল, তারা অভিযোগকে ধামাচাপা দিতে চাইছে৷ তা হলে কেজরিওয়াল সেই প্রচারই করবেন৷ আর কেজরিওয়ালের প্রচার অন্যদের তুলনায় অনেক সরাসরি ও সর্বাত্মক হয়৷ কমিশন যদি কাজ করতে না পারে, তখন কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী মোদী ও অর্থমন্ত্রী জেটলির বিরুদ্ধে নতুন করে নিশানা সাধবেন৷ ফলে বিজেপি-কে সেই আক্রমণ সহ্য করতে হবে৷ তার মোকাবিলা করতে হবে৷ আবার গোপাল সুব্রমণিয়াম কমিশন ডিডিসিএ নিয়ে বিরূপ কিছু বলে দেয়, তা হলেও বিজেপি ও মোদী সরকার বিপাকে পডবে৷ ফলে বিজেপি-র কাছে কিঞ্চিত অসুবিধা তো আছেই৷
এই সময়, নয়াদিল্লি: অরুণ জেটলি তথা ডিডিসিএ-র বিরুদ্ধে কি দিল্লি সরকার তদন্ত কমিশন গঠন করতে পারে? আপাতত এই প্রশ্নকে ঘিরেই উত্তাল রাজধানীর রাজনীতি৷ দিল্লির লেফটানান্ট গভর্নর বা এলজি নাজিব জঙ্গের মত হল, এরকম কোনও সিদ্ধান্ত দিল্লি সরকার একা নিতে পারে না৷ একমাত্র এলজি-র অনুমতিক্রমেই তাঁরা এই ধরনের তদন্ত কমিশন বসাতে পারে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে নিজের রায় জানিয়ে দিয়েছেন নাজিব জঙ্গ৷ এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক তাঁদের রায় দেবে৷ সরকারি ও বিজেপি সূত্রের খবর সত্যি হলে রাজনাথ সিং-এর মন্ত্রকও এলজি-কেই সমর্থন করতে পারে৷ কিন্ত্ত এই কমিশনের প্রধান হিসাবে দিল্লি সরকার যাঁকে নিয়োগ করেছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী গোপাল সুব্রমণিয়াম মনে করছেন, দিল্লি সরকার এই তদন্ত কমিশন গঠন করতে পারেন৷ তাই তিনি এর প্রধান হতে রাজি হয়েছেন৷ তিনি তো বিশেষ তদন্ত দল গঠন করার জন্য অফিসার চেয়ে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে চিঠিও নিখেছেন৷ সেখানে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার প্রধান অফিসারদের নাম ও তাঁদের ব্যাপারে তথ্য চেয়েছেন৷ উদ্দেশ্যটা হল, কমিশনের জন্য তদন্তের কাজে অফিসার নিয়োগ করা৷ সুব্রমণিয়াম জানিয়েছেন, তিনি সিবিআই, আইবি, দিল্লি পুলিশ থেকে অফিসারদের নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করতে চান৷