সোমবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-এ তাঁরই লেখা 'আ গ্র্যান্ডমাদারস লেগাসি: আ মেমোয়ার অফ ফাইভ জেনারেশনস হু লিভড থ্রু দ্য ডেজ অফ দ্য রাজ' বইটির প্রকাশ অনুষ্ঠানে এমন নানা ঘটনার কথা শোনালেন ম্যালিন৷
শুধু সিন্থিয়াই নন, তাঁর আগের চার প্রজন্ম- উইহেলমিনা, ওফেলিয়া, মড, আইরিন - প্রত্যেকেই ছিলেন রন্ধন পটীয়সী৷ কয়েক বছর আগে অসুস্থ মাকে দেখতে এসে হঠাত্ রান্নাঘর থেকে ঝুরঝুরে হওয়া বইটি আবিষ্কার করেন ম্যালিন৷ বইয়ে মাতৃকূলের চারজনের রেসিপির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে ঔপনিবেশিক ভারতের ইতিহাস৷ পাশাপাশি রয়েছে পরিবারের ইতিহাস৷
'হোয়াইট মেমসাব' উইহেলমিনা, ওফেলিয়া, মড নিজেরা খুব একটা রান্না না করলেও রান্নার পুরো তদারকি করতেন৷ এদের স্বামীদের প্রত্যেকেই ভারতীয় রেল-এ কর্মরত ছিলেন৷ প্রধানত দক্ষিণ ভারতে৷ এক জনের পাচক যে হিন্দু ছিলেন, তার পরিচয় পাওয়া যায় একটি পাতায় ওম ও স্বস্তিক চিহ্ন দেখে৷ ওফেলিয়া জীবনে ব্রিটেন যাননি অথচ ইয়র্কশায়ার পুডিং বানাতে ছিলেন ওস্তাদ৷ দক্ষ রাঁধুনি হওয়ার পাশাপাশি আইরিন এক সময় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, বেনজির ভুট্টোর গভর্নেস ছিলেন৷ এর পাশাপাশি তাঁর তৈরি আচারের খদ্দেরদের মধ্যে ছিলেন বিখ্যাত গায়ক ক্লিফ রিচার্ডের পরিবারও৷
স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ম্যালিন বললেন, 'ছেলেবেলায় রবিবারের মধ্যাহ্নভোজ মানেই ছিল হলুদ ভাত, কিমা বল আর মরিচ আর নারকোল দিয়ে তরকারি৷ পুরো ভারতীয় খানা৷'
পাঁচশোটিরও বেশি রান্নার গোপন তথ্যভাণ্ডার আবিষ্কার করা ছাড়াও, এ বারের কলকাতা সফরে এসে আর একটা আবিষ্কারও করেছেন ম্যালিন৷ জেনেছেন, মধ্য কলকাতার স্যান্ডাল স্ট্রিটে ১৯২৭ সালে জন্মেছিলেন মা সিন্থিয়া৷ ব্যাপটাইজড হয়েছিলেন সেন্ট জেমস গির্জায়৷ কিছু দিন পড়েছিলেন প্র্যাট মেমোরিয়াল স্কুলেও৷ আর সেই মহার্ঘ বইটি? সেটি সযত্নে রাখা আছে একটি ব্রিটিশ ব্যাঙ্কের ভল্টে৷
এই সময়: ব্রিটিশ সাংবাদিক-গবেষক জেনি ম্যালিনের মা সিন্থিয়া ১৯৫৩ সালে সপরিবার ভারত ছেড়ে লন্ডন পাড়ি দেওয়ার সময় তিনটি জিনিস সঙ্গে নিয়েছিলেন- শিল-নোড়া, বেলুন-চাকি আর রান্নার বই৷ বিলেতে এসে প্রথম প্রথম সেখানকার খাবার তাঁদের কারও মুখে রুচতো না৷ রান্নাকে ভারতীয় ধাঁচে ফেলার জন্য সাহায্য নিতে হত লি অ্যান্ড পেরিন্স-এর উরস্টার সস আর কলম্যান্স-এর মাস্টার্ড-এর৷