ঘুমপাড়ানি গুলিতে কব্জায় এল দাঁতাল

এই সময়, রায়গঞ্জ ও মালদহ: শেষ পর্যন্ত গাজোলে এসে বাগে এল গজরাজ৷ তার আগে দু'দিন ধরে বনকর্মীদের নাকানি-চোবানি খাইয়েছে সে৷ রবিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার থেকে রওনা হয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর ছুঁয়ে প্রায় ৭০ কিমি পথ পার করে মালদহে ঢোকে সে৷ রবিবার উত্তর দিনাজপুর মাতিয়ে রাখা হাতিটি যে মালদহে দর্শন দেবে তা কেউ কল্পনাতেও আনতে পারেননি৷ স্থানীয় গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান বলেন, 'সকাল ৮টা নাগাদ শুনি মাঠে হাতি এসেছে৷ গিয়ে দেখি লোকে লোকারণ্য৷ আর তার মধ্যে বিশাল হাতিটা দুলকি চালে চলেছে জমির ফসল মাড়িয়ে৷ লোকজনের চিত্কারে মাঝেমাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে বিরক্তিও প্রকাশ করছে৷'

সোমবার বিকেলে মালদহের গাজোল থানার সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিমবাড়ি গ্রামে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে দাঁতালটিকে বাগে আনতে সক্ষম হন বনকর্মীরা৷ এর পর ক্রেন ও দুই কুনকি শম্ভু ও চম্পাকলির সাহায্য নিয়ে তাকে ট্রাকে তুলে নিয়ে আসা হয় রায়গঞ্জের কুলিক জঙ্গলে৷ সেখান থেকে তাকে জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্ত্ত হাতিটিকে কবজা করতে বন দন্তরের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ এ দিন হাতিটি দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানা এলাকায় ঢুকে পড়ার পর তাকে ঘুমপাড়ানি ইঞ্জেকশন দিয়ে কব্জা করার মতো সুযোগ মিলেছিল৷

কিন্ত্ত সেই সুযোগ কাজে না লাগিয়ে বনকর্মীরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাতিটিকে নিয়ে তামাশায় মেতে ওঠেন বলে অভিযোগ৷ বনকর্মীরাও মোবাইলে হাতির ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলেন৷ এই সুযোগে পালিয়ে যায় হাতিটি৷ চলে যায় মালদহের গ্রামে৷ রবিবার থেকে অন্তত ১০০ কিমি দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল সে-ও৷ অবশেষে সেখানেই পর পর ৩০-৪০টি ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাকে ধরা হয়৷ রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্ত বলেন, 'কুনকি হাতিদের দিয়ে ওই বুনো দাঁতালকে খেলাতে ও নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে কাজ করতে গিয়েই সময় লেগেছে৷ এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়৷'