প্রতিদিনই নির্বাচন কমিশনে হাজারো প্রশ্ন আসে সাধারণ ভোটারদের তরফে৷ কমিশন সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করলেও, বহু ভোটারই তাতে সন্তুষ্ট হতেন না৷ আবার নির্বাচন কমিশনের কাজও ছিল বেশ ঝক্কির৷ ভোটারদের পরামর্শ দেওয়া, সচেতন করা এবং তাঁদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্যই ২০০৯ সালে তৈরি করা হয়েছিল একটি চরিত্র৷ নাম দেওয়া হয় আনন্দবাবু৷ ১৫০৬ নম্বরে ফোন করলেই নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পেতেন ভোটাররা৷ প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দিয়ে যথেষ্ট জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছিলেন আনন্দবাবু৷ সে সময় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ছিলেন দেবাশিস সেন৷ বর্তমানে তিনি রাজ্যের নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব তথা হিডকোর চেয়ারম্যান৷ এবার সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই নিউ টাউনের বাসিন্দাদের নানা সমস্যা শোনা এবং সেগুলির উত্তর দেওয়ার দায়িত্ব বর্তাচ্ছে আনন্দবাবুর উপর৷ এই ভাবনাটি দেবাশিস সেনেরই৷
স্মার্ট সিটির অন্যতম উদ্দেশ্যই হল নাগরিকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ নিরসন এবং পরিষেবা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ব্যবস্থা করা৷ সে কারণে, আনন্দবাবুকেও এবার হতে হচ্ছে আরও স্মার্ট৷ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর ট্রেড মার্ক ছিল হলুদ শার্ট৷ শহরজোড়া পোস্টার, ব্যানারে সেই পোশাকেই তাঁকে চিনেছিলেন সাধারণ মানুষ৷ এবার অবশ্য তিনি স্যুট-টাই পরবেন কি না, তা এখনও ঠিক হয়নি৷ তবে, তাঁকে সাহায্যের জন্য তৈরি হচ্ছে একটি ওয়েব বেসড সফটওয়্যার৷ ওয়েবসাইটে দেখা মিলবে আনন্দবাবুর৷ তাঁকে জানানো যাবে পরিষেবা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যার কথা৷ তিনিও কোন পরিষেবা কতদিনে মিলবে, সে বিষয়ে জানিয়ে দেবেন তাঁর মত৷ দেবাশিস সেন বলেন, 'অভিযোগ পাওয়ার পর সরাসরি তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষর (এনকেডিএ) সংশ্লিষ্ট বিভাগে৷ নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, তা-ও এসএমএসের মাধ্যমে অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেবেন আনন্দবাবুই৷'
দেবাশিস সেন আরও জানান, নিউ টাউনকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই প্রতি শুক্রবার স্মার্ট ফ্রাইডে নামে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করেছে এনকেডিএ৷ সেখানে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন নাগরিকরা৷ জানাচ্ছেন তাঁদের অভাব, অভিযোগের কথা৷ স্মার্ট ফ্রাইডের বৈঠক থেকেই ফের আনন্দবাবুকে স্মার্ট সিটির অভাব অভিযোগ শোনা ও নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এবার নতুন দায়িত্বেও আনন্দবাবু সফল হবেন, জনপ্রিয়তা অর্জন করবেন বলেই আশাবাদী হিডকো কর্তৃপক্ষ৷
এই সময়: ভোটের ঝক্কি সামলানোর পর এবার নতুন ইনিংস শুরু করছেন আনন্দবাবু৷ নিউ টাউনের স্মার্ট সিটি প্রকল্পে তাঁকে নিয়োগ করছে হিডকো৷ তবে, সময় এগিয়েছে৷ তায় স্মার্টনেস নিয়ে কাজ৷ তাই আনন্দবাবুকেও এবার হতে হচ্ছে স্মার্টার৷ এইডস সচেতনতায় বুলাদি আর ভোটার সচেতনতায় আনন্দবাবু৷ কাল্পনিক এই দুই প্রচার চরিত্র যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল সাধারণ মানুষের মধ্যে৷ এই পারফরম্যান্সের জন্যই আনন্দবাবুকে ফের ব্যবহার করার ভাবনা হিডকোর৷